রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জুলাই-আগষ্টে শহীদদের ছাড়া আর কারো প্রতি দায়বদ্ধতা নেই। কালের খবর পার্বত্য চট্টগ্রামের সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল কাসাভা। কালের খবর চবি এক্স স্টুডেন্টস ক্লাব ঢাকা এর সভাপতি ব্যারিস্টার ফারুকী এবং সাধারণ সম্পাদক জিএম ফারুক স্বপন নির্বাচিত। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল সম্পন্ন। কালের খবর সীতাকুণ্ড হবে বাংলাদেশের অন্যতম মডেল উপজেলা : আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী। কালের খবর মাটিরাঙ্গার গুমতিতে মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মুরাদনগরে সামাজিক সংগঠনের শীতের কম্বল বিতরণ। কালের খবর বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে ‘স্বাধীনতা সোপানে’ শ্রদ্ধা নিবেদন। কালের খবর জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন। কালের খবর
শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে মাড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছে হেলেনা খাতুন

শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে মাড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছে হেলেনা খাতুন

কালের খবর : ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। তার বাড়ি গফরগাঁও উপজেলার ঘাগড়া গ্রামে। হেলানা পরীক্ষা দিচ্ছে গফরগাঁও পৌর শহরের খায়রুল্লাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। হেলেনার এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র বাড়ি থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে।

অন্যান্য সহপাঠিরা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য হেটে অথবা দৌড়ে উঠে যায় দোতলায়। কিন্তু বাড়ি থেকে ইজি বাইকে করে আসে। কেন্দ্রে প্রবেশের পর হামাগুড়ি দিয়ে সিঁড়ি বেয়ে পৌঁছে যায় নিজের আসনে। অনেকেই তাকিয়ে দেখে অদম্য হেলেনার মনের জোর।

সদা হাসিমুখ হেলেনার। নিজের জীবনের স্বপ্ন কি জানতে চাইলে বেশ লজ্জা পায়। স্বপ্ন যদি পূরণ না হয়- এমন আশঙ্কায় বলতে চায়না নিজের স্বপ্ন। মুখে টিপে হেসে হেসে বলে, এসএসসিতে ভাল রেজাল্ট করতে চাই। আপাতত এটুকুই স্বপ্ন।

নিরন্তর প্রচেষ্টায় শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে মাড়িয়ে হেলেনা খাতুন এগিয়ে যাচ্ছে। জন্মগতভাবে দুই পা অচল। তবু দমে যায়নি হেলেনা খাতুনের স্বপ্ন। কখনো হামাগুড়ি দিয়ে আবার কখনো মায়ের সহযোগিতায় হুইল চেয়ারে চড়ে নিয়মিত স্কুলের ক্লাস করেছে।

আর দশটা শিশুর মতো সে হাঁটতে পারে না। হেলেনার মনে কষ্টের পাহাড়। সে সহপাঠীদের সঙ্গে একসঙ্গে হেঁটে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে পারে না। দৌঁড়াতে পারে না। খেলতে পারে না। তার অন্য সব সহপাঠীরা যখন স্কুল মাঠে খেলা করে, সে তখন চেয়ে চেয়ে দেখে। তার চোখের কোণে তখন বিন্দু বিন্দু নোনাপানি এসে জমা হয়। তবু সে দমেনি।

হেলেনা জানায়, ছোট বেলায় থেকেই তার পা দুটি অচল। বড় হওয়ার পরও শক্তি ফিরে আসেনি পায়ে। স্কুলের যাওয়ার তীব্র ইচ্ছা ছিল ছোট বেলা থেকেই। শারীরিক অক্ষামতার জন্য পরিবার-স্বজন ও প্রতিবেশীরা তার পড়াশোনা নিয়ে কিছুটা সংশয় প্রকাশ করলেও হেলেনার কখনো মনে হয়নি সে পারবে না। বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে স্কুল। শুরুর দিকে মাফজিলা খাতুন কোলে কওে নিয়ে যেতেন। একটু বড় হওয়ার পর হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দেয় পরিবার। হুইল চেয়াওে কওে একা একা স্কুলে যাওয়ার বায়না করলেও মা কখনো একা ছাড়েনি। হুইল চেয়ারের হাতলে সব সময় থাকতো মায়ের হাত।

হেলেনার মা বলেন, মেয়ে পড়াশোনায় বেশ ভাল। জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি উত্তীর্ণ হওয়াতার স্বপ্ন। বড় হয়ে ডাক্তার হবে মেয়ে। আবার মায়ের শঙ্কাও হয়। দেড় বছর আগে মারা গেছেন হেলেনার বাবা। ছয় ভাই-বোনের সংসারে হেলেনার স্বপ্নপূরণের পথে কোন বাধা আসে কিনা- এই শঙ্কা মায়ের মনে।

হেলেনার বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাজহারুল ইসলাম বলেন, জেএসসি সে জিপিএ ৪. ৮৫ পেয়েছে। শিক্ষকেরা আশাবাদী এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হবে হেলেনা।
ওই কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা মেহেদি হাসান বলেন, অদম্য মেধাবী হেলেনাকে দেখে মনে হয়েছে উচ্চ শিক্ষায় প্রতিবন্ধীকতা দেয়াল হয়ে দাড়াতে পারবেনা। প্রতিবন্ধীকতাকে জয় করে সে ভাল ফলাফল করবে বলে মনে হয়। যা অন্য সকল শিক্ষার্থীদের জন্য অনুকরনীয়।
সম্পাদনায় শহিদুল

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com